আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে, তখন থেকে বিএনপির পতন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক কাল হোক, তারা হারিয়ে যাবে। গণঅভ্যুত্থান কখনও সফল হতো না, যদি খালেদা জিয়া আপসহীনভাবে সরকারের বিরুদ্ধে না থাকতেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ফরহাদ মজহার বলেন, একাত্তরে আমরা বিপ্লব করিনি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একাত্তর পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান জনঅভিপ্রায় বাস্তবায়ন করেননি। তা ছাড়া গণপরিষদ ভোটও হয়নি। ফলে রাষ্ট্র গঠন করাও সম্ভব হয়নি। অথচ রাষ্ট্র গঠনে গণপরিষদ ভোট স্বীকৃত পদ্ধতি। বাহাত্তরের সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিল না। এটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। এটা করা হয়েছিল দিল্লির হাতে বাংলাদেশকে তুলে দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসানো হয়েছে। রক্ত দিয়ে তাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে ভোট গুরুত্বপূর্ণ নাকি রক্ত গুরুত্বপূর্ণ? আমরা যদি দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি, তাহলে এ পর্বে আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে না পারলে আবারও ৫০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ফলে ছাত্রদের রাষ্ট্র গঠনে গণপরিষদ ভোটের দাবি সঠিক। কিন্তু তারা এটা ব্যাখ্যা করতে পারে না।
দেশে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, আমাদের দেশের গরিব মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের শিকার হয়। মধ্যবিত্ত মেয়েরাও হয়। শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তবতা, আমাদের সমাজে মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয় তার বাবা, চাচা, ভাই ও আশপাশের আত্মীয়-স্বজন দ্বারা। এজন্য আমাদেরকে একটা কালচারাল মুভমেন্টের দিকে যেতে হবে। কারণ আমাদের মেয়েরা তো ঘরেই নিরাপদ নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাচ্যসংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা লেখক ও গবেষক বেনজীন খান, ভাববৈঠকির প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মাদ রোমেল, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, যশোরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফাহিম আল ফাত্তাহ, মারুফ কবীর এবং যশোর নাগরিক কমিটির নেতা আশালতা প্রমুখ।