শনিবার, ২২ চৈত্র, ১৪৩১ | ৫ এপ্রিল, ২০২৫ | বিকাল ৩:৪৬

জনগণের শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে: জোনায়েদ সাকি

শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে লুটপাটের উৎসবে মেতে উঠেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, দেশ থেকে টাকা পাচার করেছেন, কেউ কথা বললে তাকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এই লুটেরাদের শাসনব্যবস্থা বদলিয়ে জনগণের শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। খেটে খাওয়া মানুষের শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে পারলে গণতন্ত্র কায়েম হয়ে যাবে। এই বাংলাদেশ খেটে খাওয়া মানুষের বাংলাদেশ।

সোমবার (১৭ মার্চ) আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) আয়োজিত চলমান গণইফতার কার্যক্রমের ১৬তম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এবি পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণইফতারের আয়োজন করছেন যা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এমন আয়োজনের জন্য এবি পার্টিকে ধন্যবাদ। এমনি এমনি তো এই রাষ্ট্র আমরা পাইনি, যুদ্ধ করে আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র পেয়েছি, যোদ্ধা হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। সম্পদ তৈরি করেন আপনারা আর ভোগ করে অল্প সংখ্যক লোকেরা। এভাবে চলতে পারে না। এই দেশ হবে খেটে খাওয়ার মানুষের।

তিনি বলেন, হাসিনা কী এমনি এমনি পালিয়েছে। ১৬০০ মানুষের জীবনের বিনিময়ে হাসিনাকে পালাতে হয়েছে। হাসিনা পালানোর মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির সুযোগ হয়েছে, সেটি আমরা হেলা-ফেলায় বেহাত হতে দেবো না। এজন্য পুরাতন রাজনীতি ছুঁড়ে ফেলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্যে দিয়ে জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, পুরাতন বন্দোবস্ত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য ২৪ পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানে এই সময়ে রাষ্ট্রকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না। ‘মবে’র (সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) নাম করে আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।

সভাপতির বক্তব্যে পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আপনারা তো ভালো নেই, ভালো থাকলে এখানে আসতেন না! এই রাষ্ট্রে শেখ হাসিনার মতো শাসক কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শাসন করেছে আমাদেরকে, যার ফলে ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনাকে পালাতে হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে অপরাধ শূন্যের কোঠায়, মানুষের অভাব পূরণের মধ্যে দিয়ে এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, আগে রাষ্ট্রের অভাব দূর করতে হবে, তারপর মানুষকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অভাব দূর করতে না পারলে শাস্তি দেওয়ার অধিকার নাই। উন্নত রাষ্ট্রগুলো আগে আমাদের চাইতে অনেক নিচে ছিল, ওরা এখন আমাদের চাইতে অনেক উন্নত, কারণ ওদের সমাজ পরিবর্তনে কিছু কাজপাগল দেশপ্রেমিক মানুষ ছিল। সেই উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মতো আমরাও সমাজটাকে পরিবর্তন করতে চাই।

গণইফতার কার্যক্রমে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান, স্বেচ্ছাসেবা ও জনকল্যাণ বিষয়ক সহসম্পাদক কেফায়েত হোসাইন তানভীর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ, পল্টন থানা আহ্বায়ক আবদুল কাদের মুন্সী ও যুব নেতা ইমরান হোসেন শিবলু।

গণইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন– এবি পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু হেলাল, যুবপার্টির দফতর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার রাসেল, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহসম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, সহদফতর সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, শরণ চৌধুরী, সহ-অর্থ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সহ-প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদসহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

ট্যাগ :

সর্বশেষ প্রকাশিত

ইউটিউবে যুক্ত হোন

সম্পাদক:

কপিরাইট ২০২৫ | ফাইন্ডিং পলিটিক্স