জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেছেন, বাংলাদেশে অন্য কোনও রাষ্ট্রের আধিপত্যবাদ চলবে না। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় অন্য সব দেশের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছাত্র-জনতার সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। অবিলম্বে জুলাই গণহত্যার তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন, নারী ও শিশু ধর্ষণের বিচার, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ১২ ছাত্র নেতার মামলা প্রত্যাহার বিভিন্ন দাবিতে এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনেন নেতাকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক।
আনু মোহাম্মদ বলেন, ভারত বিরোধিতার আওয়াজ তুলে দেশে ভারতের স্বার্থ রক্ষার রাজনীতির পুনরাবৃত্তি চলছে। সেটি অব্যাহত থাকবে তা হতে পারে না। দিল্লি, ইসলামাবাদ, মস্কো, ওয়াশিংটন যেকোনও শক্তির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেই স্লোগান দিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বৈষ্যম সৃষ্টিকারীরা মব জাস্টিস করলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরকারের উচিত, ভুক্তভোগীদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়া। দিল্লি আমাদের দেশে কীভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে, তা তুলে ধরতে হবে। আদানি, ট্রানজিট ও রামপালসহ ভারতের সঙ্গে হওয়া সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।
আনু মোহাম্মদ বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিজেদের জীবন বাজি রেখে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রমিকরা। তাদের মধ্যে নতুন করে লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে আমাদের সরকার প্রধান হলেও ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা পথে পথে ঘুরছেন সুবিচারের জন্য। তিন বছরেও তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি। সরকার তাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তিনি বলেন, অপরদিকে শ্রমজীবী নারীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। এমনটি হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ কীভাবে হবে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হলে জাতিগত, লিঙ্গীয়, শ্রেণিগত এবং ধর্মীয় বৈষম্য কীভাবে নিরসন হবে তার কোনও রূপরেখা নেই। আমরা দেখছি, বৈষম্যবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা আরও বেড়ে গেছে। যারা বিগত সরকারের সময় বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছে, এখনও তারা সেসব সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
আনু মোহাম্মদ বলেন, যে বসুন্ধরার মালিকের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রী মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যার সুষ্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ব্যাংক থেকে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন। অথচ সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার। অন্যদিকে শিক্ষক ও শ্রমিকরা নিজেদের অধিকার আদায় এবং মেয়েরা ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করলে সরকারি বাহিনী তাদের ওপর আগ্রাসী আচরণ করছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন।