মঙ্গলবার, ১১ চৈত্র, ১৪৩১ | ২৫ মার্চ, ২০২৫ | রাত ১০:৫৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কুতুব আবির্ভূত হয়েছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে— যেন এই প্রক্রিয়া (নির্বাচন) পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়, অন্য কারও সাহায্য করা যায়, দেশে একটা অনৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়, সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় লক্ষ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু নতুন নতুন … আমি বলি, ‘কুতুব’ আবির্ভূত হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চান জানি না।’

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনার শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ শুরু এবং এর ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।

আলোচনায় বিএনপির মহাসচিব উল্লেখ করেন, সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করতে ‘দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে’। সবাইকে সতর্কথাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি— জোর দিয়ে বলেছি যে, নির্বাচনের কোনও বিকল্প নেই। কারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমাদেরকে গণতন্ত্রে যেতে হব। সেটা হচ্ছে এ টু জেড ডেমোক্রেসি। এই ডেমোক্রেসি ছাড়া আমরা মনে করি না যে, আর কোনও সিস্টেম আছে, যে সিস্টেমে জনগণের কল্যাণ করতে পারে।’

‘সোশ্যাল মিডিয়ার কুতুবদের’ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাদের ভাষা, তাদের বাক্য, তাদের কথা, তাদের বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকে একটা নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চায়, তারা গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যেতে চায় না। আজকে আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।’

‘কারণ বিএনপি একমাত্র দল যে প্রতিবার, প্রতিটি বিপদে-আপদে এসে তারা রুখে দাঁড়িয়েছে, তারা সবসময় রক্ষা করেছে বিপদ থেকে। বিএনপি সেই দল যারা বাংলাদেশকে সব সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকেও সেই সময় এসেছে, যে সংকট আজকে সৃষ্টি হচ্ছে এমন সংকট যে, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাকে পর্যন্ত আজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে… যা আমরা কোনও মতেই মেনে নিতে পারি না। যারা আমাদেরকে দেশকে রক্ষা করে, যারা সংকটের সময়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়— তাদেরকে আমরা কখনই বিতর্কিত হতে দিতে পারি না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ২০২৪ সালে যারা প্রাণ দিয়েছেন… শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা আমরা জানাই, সব সময় জানাই। আর যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতিও আমাদের সমবেদনা জানাই। সেই আন্দোলনেরও আমাদেরও প্রায় ৮শ’র মতো ছাত্র-যুবক তারা শহীদ হয়েছেন। ১৫ বছর আমরা লড়াই করেছি, আমাদের নেতাকর্মীরা কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের ছেলেরা এখনও তারা মোটরসাইকেল চালায়, হকারি করে।’

‘এরপরেও আমাদেরকে শুনতে হয় যে, বিএনপি কী করেছে? বিএনপিই তো আন্দোলন শুরু করেছে, বিএনপিই তো এত ত্যাগ স্বীকার করেছে, বিএনপি তো ভিত্তি তৈরি করেছে। আজকে হঠাৎ করে বিপ্লব ঘটেনি। বিপ্লবের ভিত্তি তৈরি করতে হয়েছে, এই ভিত্তি তৈরি করেছে বিএনপি।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তাই আপনাদের দলকে ছোট করার কোনও কারণ নেই। সব সময় বুক উঁচু করে বেড়াবেন। এই বিপ্লব এই পরিবর্তনের আপনারাই হচ্ছে হোতা, আপনারাই সামনের দিয়ে নিয়ে যাবেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং ভালোভাবে শুনুন— এমন কথা যেন আমাদেরকে না শুনতে হয় যে, বিএনপি খারাপ কাজ করছে।’

‘তাহলে যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, সেই সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়ে যাবে। এখানে (আলোচনা সভা) ঢাকার নেতারা, ঢাকার বিভিন্ন শ্রেণির নেতারা আছে— আপনারা আপনাদের নেতারা সবাইকে নিয়ে এ বিষয়গুলো সবসময় খেয়াল করবেন। আর মনে রাখবেন, আপনাদের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ, আপনাদের ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। আপনাদের ওপরই নির্ভর করছে ভবিষ্যতে বৈষ্যমবিরোধী বাংলাদেশ।’

ট্যাগ :

সর্বশেষ প্রকাশিত

ইউটিউবে যুক্ত হোন

সম্পাদক:

কপিরাইট ২০২৫ | ফাইন্ডিং পলিটিক্স