১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধ বলে আখ্যা দিয়েছেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান। তিনি বলেছেন, যা বাংলাদেশের ভিত্তি। এটির সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সাম্যের চেতনা যতদিন বাস্তবায়িত না হবে, ততদিন ’৯০ ও ’২৪ এর মতো গণঅভ্যুত্থান বারে বারে আসবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। গতকাল ২৬ মার্চ সেগুনবাগিচায় ভ্যানগার্ড মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভার তথ্য আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বাসদ।
খালেকুজ্জামান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা উচ্ছেদ হয়নি। ফলে অতিনিয়ন্ত্রিত স্বৈরাচার থেকে এখন অনিয়ন্ত্রিত স্বেচ্ছাচার চলছে। এখন অনেকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছে, কিন্তু ব্যবস্থা বদল না হলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে না। অনেকে ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থান দিয়ে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে ঢেকে দিতে চায়। এটি অসম্ভব।
তিনি বলেন, শাপলা চত্বর আর শাহবাগের মতো অহেতুক বিতর্ক সামনে এনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। মুক্তিযুদ্ধকে বাতিল করার পরিকল্পনা হিসেবে সংবিধান থেকে চার মূলনীতি বাতিলের প্রস্তাব তোলা হচ্ছে। এই চার মূলনীতি আওয়ামী লীগের আবিষ্কার নয়। বরঞ্চ পাকিস্তানি প্রায় ঔপনিবেশিক শাসন শোষণের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষায় গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের চেতনা মূর্ত হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর যাবত বুর্জোয়া শাসকগোষ্ঠী এই মূলনীতির বিপরীতে দেশ পরিচালনা করে বাংলাদেশকে চরম বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের চেতনার বিপরীতে রাষ্ট্র শাসন করছে। চাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের দখলে। ট্রাক সেলের দীর্ঘ লাইন দেখে বুঝা যায় নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলা-নির্যাতন বিগত ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়।
বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার ইনচার্জ নিখিল দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচনা করেন বাসদের ঢাকা মহানগররের সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।