বৃহস্পতিবার, ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ | দুপুর ১২:৩৭

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বাসদের যত আপত্তি

৫টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট ও সুপারিশের ওপর লিখিত মতামত জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। দলটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। এসব আপত্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সংবিধানের প্রিয়েম্বল বা ভূমিকা পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই’ বলে মত দিয়েছে বাসদ। দলটি মনে করে, ‘কমিশনের সুপারিশে পাকিস্তান আন্দোলনের ইতিহাস অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে সমান্তরাল দেখানোর বা কোনও ক্ষেত্রে ’৭১-কে ’২৪ দিয়ে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জনসাধারণের কাছে প্রতীয়মান হতে পারে।’

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সংসদ ভবনস্থ এলইডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদারের নিকট জমা দেওয়া হয়। এসময় বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, সদস্য জুলফিকার আলী ও প্রকৌশলী শম্পা বসু।

বাসদ মনে করে, ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা, আত্মত্যাগ, ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ ১৫ বছরের সংগ্রাম ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধানের শেষে অ্যানেক্স হিসেবে যুক্ত থাকতে পারে।

সংবিধানের সংশোধনের ক্ষেত্রে ৭(ক) এবং ৭(খ) বাতিল চেয়েছে বাসদ। দলটি রাষ্ট্রের নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বহাল রাখতে বলেছে।

সংবিধানের ২য়, ৪র্থ, ৫ম, ৮ম-সহ অগণতান্ত্রিক সকল সংশোধনী ও নিবর্তনমূলক সকল কালাকানুন বাতিল চেয়েছে বাসদ। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি-গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে দলটি।

‘সংসদের মেয়াদ ৫ বছর রাখা। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বারের বেশি নয় এবং কর্তৃত্ব যুক্তিসঙ্গত করা। সংসদ নেতা, প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান একই ব্যক্তি হবে কিনা সেটা স্ব স্ব দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্ধারণের এখতিয়ার রাখা।’

‘মোট আসনের ১০ শতাংশ তরুণ তরুণীদের মনোনয়নের প্রস্তাব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ভোটার ও প্রার্থীর বয়স কমিয়ে যথাক্রমে ১৭ ও ২১ বছর করার সিদ্ধান্ত এই সময়ে অপ্রয়োজনীয় এবং সন্দেহ উদ্রেককারী।’ বলে জানায় বাসদ।

আইনসভার নির্বাচনে নারী সদস্যদের সংখ্যা ১০০-তে উন্নীত করে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। পাশাপাশি জামানত সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকায় সীমিত রাখা। নির্বাচনি ব্যয়ের সীমা ৩ লাখের বেশি নয় এবং নিয়মিত তদারকি ও নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, সুয়োমটোর ভিত্তিতে কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান করার পক্ষে মত দিয়েছে বাসদ।

বাসদের মতামতে বলা হয়েছে, গণপরিষদ/সংবিধান সংস্কার সভা/জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আমাদের মত- এই মুহূর্তে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান জরুরি। নির্বাচিত সংসদই স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কারগুলো আলোচনা করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে পারবে।

চিঠিতে বাসদ জানায়, স্থানীয় সরকার না জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আমাদের মত- সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা।

ট্যাগ :

সর্বশেষ প্রকাশিত

ইউটিউবে যুক্ত হোন

সম্পাদক:

কপিরাইট ২০২৫ | ফাইন্ডিং পলিটিক্স