শুক্রবার, ৭ চৈত্র, ১৪৩১ | ২১ মার্চ, ২০২৫ | রাত ১১:৫০

আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে গণঅধিকার পরিষদ

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অবস্থান ও গণসাক্ষর কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নুর। শুক্রবার (২১ মার্চ) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তিনি এই ঘোষণা দেন।

গণঅধিকার সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আমরা লক্ষ্য করছি, আওয়ামী লীগের কালো টাকার লোভে অনেক রাজনৈতিক দল তাদের রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এসময় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদেরও সমালোচনা করেন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ছাত্র সমন্বয়করা তদবির করে আওয়ামী লীগের দোসরদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে, আর দোষ চাপাচ্ছে সেনাবাহিনী ও সরকারের ওপর। সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যারা দল গঠন করেছে, তারাও শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট দল হতে চায়।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, যারা রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিয়ে দল গঠন করেছে, তারা আজ দেশে বিভাজন ও নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়। কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী তাদের সহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

নুর বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী যদি জনগণের পাশে এসে না দাঁড়াতো, তাহলে দেশে একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো। গণঅভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীকে কেন জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে সেই প্রশ্ন রাখেন তিনি। কিছু বুদ্ধিজীবী কৌশলে গণঅভ্যুত্থানে সেনা কর্মকর্তাদের অবদান অস্বীকার করে বিভাজন তৈরি করতে চায়। এতে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে, তাই সকলকে এই বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এটা নিয়ে নতুন করে জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজন নেই। ৫ আগস্টেই জনগণ রায় দিয়েছে, এই দেশে আওয়ামী লীগ আর রাজনীতি করতে পারবে না। সুতরাং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কোনও সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন মানে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি। এই বেইমানি কাউকে করতে দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দলটিকে নিষিদ্ধ করার কোনও পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। তবে দলটির নেতৃত্বের মধ্যে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দেশের আদালতে বিচার করা হবে।’

প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। গণঅভ্যুত্থান পরে দরকার ছিল ঐকমত্যের সরকার। কিন্তু সেটি না করে এনজিও ব্যক্তিত্ব ও বৃদ্ধ আমাদের নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। যারা ৭ মাসেও আ.লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারেনি। বরং সরকার এখন বলছে, নির্বাচন যাওয়া না যাওয়া আ.লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু গণহত্যাকারী দল কোনভাবেই দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচনে যেতে পারে না। সরকারকে জাতীয় সংলাপে ডেকে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আগামী নির্বাচন কেন, আর কোনও নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না।‘

বিক্ষোভ মিছিল শেষে গণঅধিকারের পক্ষ থেকে একটি গণমিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি পল্টন আল-রাজি সেন্টারের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে আবার গণ অধিকারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দফতর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য ফারুক হাসান, হাসান আল- মামুন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকারের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

ট্যাগ :

সর্বশেষ প্রকাশিত

ইউটিউবে যুক্ত হোন

সম্পাদক:

কপিরাইট ২০২৫ | ফাইন্ডিং পলিটিক্স