সোমবার, ১ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ | রাত ১:২৯

নির্বাচিত সরকারের বিকল্প আপনারা হতে পারেন না: সালাউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতারকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ওনারা নাকি নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণ নাকি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ওনাদের নির্বাচিত করেছেন। তাহলে দেশে ইলেকশন কমিশন আছে কেন? নির্বাচিত সরকারের বিকল্প তো আপনারা হতে পারেন না। আপনারা অবশ্যই অনির্বাচিত। সেটি প্রতিদিনই আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলে আপনারা গণতন্ত্রের উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করবেন, নির্বাচনের কথা বলে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করবেন, এটা কি গণতন্ত্রের জন্য শুভ? এটা কি গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশা ছিল? যখনই প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপের জন্য দাবি করি, তখনই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়, জনগণ নাকি তাদের ৫ বছরের জন্য চায়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে তো আমরাও বহু কমেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। এটা কি উনি (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) দেখেননি?

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের স্বামী ফরহাদ মজহারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, উনি কয়েক দিন আগে বলেছিলেন নির্বাচনের মাধ্যমে নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না, লুটেরাদের সাম্রাজ্য নাকি প্রতিষ্ঠা হয়। যে নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার ও সাংবাদিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দেশের হাজার মানুষ শহীদ হলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলো, সেই নির্বাচন; সেই ভোটাধিকারকে আপনারা অস্বীকার করছেন?

তিনি আরও বলেন, কাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য, কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টা প্রায় ডিসেম্বর-জুন এ সমস্ত আসা-যাওয়া করছেন? প্রধান উপদেষ্টা এক জায়গায় স্থির থাকতে পারছেন না কেন? আপনি (ড. ইউনূস) একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আপনার এরকম শিপটিং জাতি এবং আন্তর্জাতিক মহল ভালোভাবে নেবে না। আমাদের সঙ্গে আপনারা বৈঠক করেছিলেন, কথা দিয়েছিলেন আপনাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে ডিসেম্বরকে সামনে রেখে, জাতীয় নির্বাচনের উদ্দেশ্যে। আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বসেছি, কথা বলেছি এবং তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি আগামী জুন মাসের ভেতরে সমাপ্তি হবে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য উদগ্রীব। এখন সেই কথা যদি আমরা বলি, তাহলে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি; জানি না কেন এ দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি এগুলোর সমর্থনে কথা বলতে উচ্চকিত হচ্ছেন না।

তিনি বলেন, আমাদের অনেক রকমের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, যারা ১/১১ করেছেন তারাও অনেক রকমের কথা বলে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় দুই বছর পর্যন্ত ছিলেন। সেই ১/১১-এর মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের কথা আপনাদের মনে নেই? বিরাজনীতিকরণের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা তারা করেনি? আমি বলতে চাই না সে রকমের পদক্ষেপ বর্তমানে দৃশ্যমান হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে এক দফার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক এবং গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেছিল। কেউ যদি এটাকে বিপ্লব বলতে চায়, তাহলে আমি দুঃখ প্রকাশ করবো। এটা কোনও সামাজিক বিপ্লব নয়। অর্থনীতি, সামাজিক রীতিনীতি এবং ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনও বিপ্লব হয়নি। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা থেকে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একটি গণতান্ত্রিক ছাত্রঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চাই। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ভোটাধিকার এবং সাংবিধানিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের সংবিধান যেটা রোগাক্রান্ত হয়েছে, সেই সংবিধানকে যথাযথ সংস্কারের মধ্য দিয়ে, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের মধ্য দিয়ে, একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সংবিধান দেখতে চাই। যে সংবিধানের ভিত্তিতে আমাদের দেশ একটি ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা পাবে এবং আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটবে।

ট্যাগ :

সর্বশেষ প্রকাশিত

ইউটিউবে যুক্ত হোন

সম্পাদক:

কপিরাইট ২০২৫ | ফাইন্ডিং পলিটিক্স